দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ সহ পিডিএফ

আমরা সবাই জানি, আল্লাহতায়ালার রহমত প্রাপ্তির অন্যতম পন্থা হলো রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের প্রতি  দরুদ পাঠ করা। মহান আল্লাহতায়ালা সূরা আহযাবের ৫৩ নং আয়াতে আমাদের প্রিয় নবিজী (সাঃ) এর প্রতি দরুদ পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেনঃ

إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا

অর্থঃ নিশ্চয় আল্লাহ (ঊর্ধ্ব জগতে ফেরেশতাদের মধ্যে) নবীর প্রশংসা করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর জন্য দো’আ করে। হে মুমিনগণ, তোমরাও নবীর উপর দরূদ পাঠ কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।

বিশেষ করে দরুদের পাঠের ক্ষেত্রে আমাদের মনে স্বাভাবিকভাবেই একটা প্রশ্ন চলে আসে কোন দরুদটি পড়া উত্তম এবং কখন পড়া উচিত। আমাদের সবার ওই ‍দরুদটাই পড়া উচিত যেটা রসূল (সাঃ) নিজে তার সাহাবীদের শিখিয়েছেন।

আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) আমার সঙ্গে দেখা করে বললেন, আমি কি আপনাকে এমন একটি হাদিয়া দেব না যা আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছি? আমি বললাম, হাঁ, আপনি আমাকে সে হাদিয়া দিন।

তিনি বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাদের উপর অর্থাৎ আহলে বাইতের উপর কিভাবে দরুদ পাঠ করতে হবে? কেননা, আল্লাহ তো (কেবল) আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাম করব।

তিনি বললেন, তোমরা এভাবে বল, “হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম (‘আঃ) এবং তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী।

হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বংশধরদের উপর তেমনি বরকত দান করুন যেমনি আপনি বরকত দান করেছেন ইবরাহীম (‘আঃ) এবং ইবরাহীম (‘আঃ)-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী।(সহিহ হাদিস)

দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَ اهِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ-

 اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَ اهِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ

উচ্চারনঃ

আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ ।

আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।

অর্থঃ

যে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ আশীর্বাদ অবতীর্ণ কর যেইরূপ আর্শীবাদ হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ । নিশ্চই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম ।

হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম (আঃ) এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ । নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।

আরও পড়ুনঃ আয়াতুল কুরসি বাংলা | Ayatul Kursi Bangla অনুবাদ,অর্থ,ফযিলত এবং তাৎপর্য

দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ সহ পিডিএফ

ডাউনলোড করুন দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ সহ পিডিএফ!!

দুরুদ শরীফ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ ছবি

দুরুদ শরীফ কখন পড়তে হবে

উবাই (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি তো খুব অধিক হারে আপনার প্রতি দরুদ পাঠ করি। আপনার প্রতি দরুদ পাঠের জন্য আমি আমার সময়ের কতটুকু খরচ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ ইছা কর।

আরও পড়ুনঃ সূরা বাকারা শেষ দুই আয়াত অনুবাদ,উচ্চারণ,ফযিলত এবং গুরুত্ব

আমি বললাম, এক-চতুর্থাংশ সময়? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু ইচ্ছা কর, তবে এর চেয়ে অধিক পরিমাণে পাঠ করতে পারলে এতে তোমারই মঙ্গল হবে।

আমি বললাম, তাহলে আমি কি অর্ধেক সময় দরুদ পাঠ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ চাও, যদি এর চেয়েও বাড়াতে পারো সেটা তোমার জন্যই কল্যাণকর। আমি বললাম, তাহলে দুই-তৃতীয়াংশ সময় দরুদ পাঠ করবো?

তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ ইচ্ছা কর, তবে এর চেয়েও বাড়াতে পারলে তোমারই ভাল। আমি বললাম, তাহলে আমার পুরো সময়টাই আপনার দরুদ পাঠে কাটিয়ে দিব? তিনি বললেনঃ তোমার চিন্তা ও কষ্টের জন্য তা যথেষ্ট হবে এবং তোমার পাপসমূহ ক্ষমা করা হবে। [হাসানঃ সহীহাহ (৯৫৪), ফাযলুস সালাত আল্লান্নাবী (১৩,১৪)]

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,“ সবচেয়ে উত্তম দিন জুমু’আর দিন।  এ দিন আদম আ. কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তার রূহ কবজ করা হয়েছে। এ দিন কিয়ামত সংঘটিত হবে এবং এ দিনই পুনরুত্থান হবে।  তোমরা এ দিন আমার উপর বেশি বেশি করে দুরূদ পড়।  কারণ,তোমাদের দুরূদ আমার নিকট পেশ করা হয়। [আবু দাউদ, হাদিস: ১০৪৭ নাসায়ী, হাদিস: ১৩৪৫]

Leave a Comment